আপনি যদি কন্যা সন্তানের পিতা কিংবা মাতা হয়ে থাকেন। কিংবা আপনি হয়ত শুনছেন আপনার কন্যা সন্তান হতে চলেছে। তাহলে আপনি অবশ্যই নাম সিলেক্ট করে রাখেন। কিন্তু আমরা অনেকেই ভুল করে কিছু নাম রেখে ফেলি যাহা রাখার বিধান ইসলামে নাই।
জাহেলিয়াতের যুগ থেকে এখন পর্যন্ত কন্যা সন্তানের জন্ম মানে হতভাগা মনে করেন। পক্ষান্তরে পূত্র সন্তান হলে অনেকে সৌভাগ্যবান মনে করে। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বরং ছেলে হোক কিংবা মেয়ে হোক নেককার হলেই আপনি সৌভাগ্যবান।
ইসলামে কন্যা সন্তানের গুরুত্ব
কন্যা সন্তানের বাবা মা হওয়া বরং সৌভাগ্যের লক্ষন। রাসুল্লাহ (সা:) বলেছেন,” যার দুটি কন্যা সন্তান বা দুটি বোন রয়েছে, সে তাদের সাথে খুবই উত্তম আচরণ করে, আমি এবং সে এভাবে পাশাপাশি জান্নাতে থাকবো। সুবহানাল্লাহ। রাসূল (সা:) দুটি আংগুল ইশারা করে এভাবে বুঝিয়েছেন যে, আংগুল দুটির মাঝে যেমন কোন দূরত্ব নেই। তেমনি সদাচরণকারী কন্যা সন্তানের জনক অথবা বোনের প্রতি সদাচরনকারী ভাই আমি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে পাশাপাশি জান্নাতে থাকবে।
অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, যার একটি কন্যা তার একটি জান্নাত, যার দুটি কন্যা তার দুটি জান্নাত। সুবহানাল্লাহ। তবে কন্যা সন্তানের হক সঠিকভাবে আদায় করতে হবে।
সুন্দর নাম রাখার গুরুত্ব
সন্তান জন্মের সাত দিনে মাথায় কিংবা চৌদ্দতম দিনে সম্ভব না হলে একুশতম দিনে একটি ছাগল বা ছাগি জবাই করে উক্ত সন্তানের নামে আকিকা করা, আকিকার গোশত সন্তানের বাবা মা তার পরিবার আত্মীয়-স্বাজন সবাই মিলে খাওয়া সুন্নাহ।
তেমনিভাবে আপনার সন্তানের প্রথম মাথা মুন্ডানো এবং চুলগুলো ওজন করে সমপরিমান রৌপ্য বা রৌপ্য মূল্য অসহায় লোকদের সদকা করা অভিভাবক হিসেবে আপনার দায়িত্ব।
অতপর আকিকার আগেই একটি সুন্দর অর্থবহ নাম রাখা পিতা হিসেবে আপনার কাছে সন্তানের প্রাপ্য হক।
সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তাকে উত্তম শিষ্টাচার শিক্ষা দেওয়া বাবার উপর সন্তানের হক। (মুসনাদে বাযযার হাদীস ৮৫৪০)
রাসুল (স:) আরও বলেন, নিশ্চই তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন তোমাদের নাম ও তোমাদের বাবাদের নাম ধরে ডাকা হবে। সুতারং তোমরা সুন্দর অর্থবহ নাম রাখো।
ছেলে কিংবা মেয়ের নাম রাখার ক্ষেত্রে দুটি মূলনীতি লক্ষনীয়। ১) সুন্দর অর্থবহ হওয়া ২) কোরআন সুন্নাহের সাথে সাংঘর্ষিক না হওয়া।
সুতারং আমরা এখানে দেখব ইসলামে যেসব নাম রাখা হারাম। যা কন্যা সন্তানের নামকরণ করা উচিৎ নয়।
আমরা সাধারনত বেশিরভাগ আরবি বাংলা উর্দু ও ফারসী ভাষার সংমিশ্রনে নাম রাখি।
মুসলিম হিসাবে আমরা কারো নাম রাখার ক্ষেত্রে আরবী ভাষাকেই সবচেয়ে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। কিন্তু তার প্রকৃত অর্থ না জানার দরুন নামের ক্ষেত্রে মারাত্মক ভুল করে থাকি।
তাই এমন কিছু বহুল প্রচলিত আরবি নাম উল্লেখ করব যেগুলো শুনতে খুব ভাল হলে শাব্দিক বা পারিভাষিক অর্থের বিবেচনায় তা নিষিদ্ধ।
কোন কোন নাম রাখা হারাম মেয়েদের
- عاصیه আ’সিয়া যার অর্থ হলো নাফরমান মহা পাপী। হাদিস শরীফে বর্ণিত রাসুল (সা:) এর নিকট এক কন্যা সন্তান আনা হলো যার নাম আ’সিয়া। অতপর: রাসূল (স:) তা পরিবর্তন করে রাখলেন জামিলা। তবে এক্ষেত্রে অনেকেই মনে করবেন ফেরাউনের স্ত্রীর নাম তো ছিল আছিয়া। যিনি খুবই মহীয়সী নারী ছিলেন। হ্যা আপনার ধারনা অবশ্যই সঠিক। কিন্তু ঐ নামটি লেখা ও উচ্চারণে আইন এর পরিবর্তে হামযাহ্ দিয়ে শুরু اسیه। সেই নামের অর্থ শান্তি স্থাপনকারী।
- বাররাহ: যার অর্থ মহা পবিত্র। এটি একটি নিষিদ্ধ নাম, কোননা আল্লাহ তায়া’লা এরশাদ করেন, “অতএব তোমরা নিজেদেরকে পবিত্র মনে করো না।
- রিয়া: যার অর্থ হচ্ছে অহংকার, অহমিকা। এ নামেও কন্যা সন্তানের নামকরণ সম্পূর্ণ নিষেধ।
- মানাত: জাহেলি যুগের একটি দেবতার নাম ছিল এটি। তাই ইসলামের দৃষ্টিতে এ নামটি সম্পূর্ণ হারাম।
- ছাহেরা: পবিত্র কোরআন হাদিসে অসংখ্য জায়গায় সাহের বা সাহেরা নর নারীকে অভিশম্পাত করা হয়েছে। কেননা সাহেরা বলা হয় ঐ নারীকে যে মানুষকে যাদুগ্রস্ত করে। যা সম্পূর্ণ হারাম।
- মাসুমা: যার অর্থ হচ্ছে চির নিস্পাপ। এটি মূলত মাসুম শব্দের স্ত্রীবাচক শব্দ। মুসলিম হিসাবে আমরা সকলে বিশ্বাস করি পৃথিবীতে কেবল মাত্র নবীগন মাসুম তথা গোনাহ থেকে নিস্পাপ।
- আসিফা: যার অর্থ হলো আফসোসকারী নারী। আফসোস ও হতাশ যদি মানুষের নাম হয় তাহলে তার প্রভাব কি হতে পারে জ্ঞানী হিসাবে আপনি নিজেই বুঝতে পেরেছেন।
- মানতাশা: এই নামের অর্থ হচ্ছে তুমি যা চাও তাই করো। এটি কি মেয়ের নাম হতে পারে?
- রামা: রাম হলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এক বিশেষ দেবতার নাম। যে নামে সন্তানের নামকরন সম্পূর্ণ হারাম।
- মারদিা বা ওহিনা
সুন্দর নাম: মেয়েদের ইসলামিক নাম অর্থসহ ২০২৪।
তাই আপনি এই নামগুলো পরিহার করে সুন্দর ইসলামিক নাম রাখুন। ধন্যবাদ