বর্তমান বিশ্বে অনেকেই স্বপ্ন দেখেন বিদেশে পড়াশোনা, চাকরি বা ভালো জীবনের আশায় পাড়ি জমানোর। কিন্তু প্রশ্ন হলো—সরকারি ভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায় কী? কিভাবে প্রতারণা ছাড়াই বিশ্বমানের সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে আপনি সরকারি সহায়তায় বিদেশ যেতে পারেন?
এই আর্টিকেলে আমরা জানবো সরকারি প্রোগ্রাম, স্কলারশিপ, চাকরির সুযোগ এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির সম্পূর্ণ গাইড।
✅ কেন সরকারি মাধ্যমে বিদেশ যাওয়া সেরা বিকল্প?
সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিদেশে যাওয়ার মূল সুবিধাগুলো হলো:
- খরচ কম: প্রাইভেট এজেন্সির তুলনায় সরকারি প্রোগ্রামের ফি অনেক কম বা একেবারেই থাকে না।
- নির্ভরযোগ্যতা: জালিয়াতি বা প্রতারণার সম্ভাবনা একেবারেই কম।
- সহজ তথ্যপ্রাপ্তি: সরকারি ওয়েবসাইট ও হেল্পলাইন থেকে তথ্য পাওয়া যায়।
- বৃত্তির সুযোগ: অনেক সময় সম্পূর্ণ ফ্রি তে পড়াশোনা ও থাকা-খাওয়ার সুবিধা পাওয়া যায়।
🌐 বাংলাদেশ সরকারের বিদেশ যাত্রা সংক্রান্ত প্রধান প্রোগ্রামসমূহ
১. প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
এই মন্ত্রণালয় দেশের কর্মপ্রত্যাশীদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং বিদেশে বৈধভাবে পাঠানোর জন্য নানা কর্মসূচি চালায়।
🔗 অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: probashi.gov.bd
২. BOESL (Bangladesh Overseas Employment and Services Limited)
এটি সরকারের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান, যারা বিভিন্ন দেশে কর্মী পাঠায়।
- গন্তব্য দেশ: দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, সৌদি আরব, কাতার, মালয়েশিয়া
- জনপ্রিয় প্রোগ্রাম: EPS (Employment Permit System) – দক্ষিণ কোরিয়া
- আবেদনের নিয়ম: BOESL ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করতে হয়।
🔗 অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: boesl.gov.bd
🎓 সরকারি স্কলারশিপে বিদেশে পড়াশোনার উপায়
বাংলাদেশ সরকার বা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি বৃত্তির সুযোগ দেয়।
জনপ্রিয় স্কলারশিপসমূহ:
- DAAD (জার্মানি)
- MEXT (জাপান)
- Erasmus Mundus (ইউরোপের বিভিন্ন দেশ)
- Chinese Government Scholarship
- Turkiye Burslari (তুরস্ক)
আবেদনের প্রক্রিয়া:
- নিজ যোগ্যতা যাচাই করুন (CGPA, IELTS, SOP ইত্যাদি)
- আবেদন ফর্ম পূরণ ও ডকুমেন্ট সাবমিট
- ইন্টারভিউ (যদি থাকে)
- ভিসা ও যাত্রার প্রস্তুতি
📌 কিছু স্কলারশিপে বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের NOC লাগে।
👷♂️ সরকারি অনুমোদিত বিদেশি চাকরি প্রোগ্রাম
বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে বৈধ বিদেশি চাকরির ব্যবস্থা করে থাকে।
কোন দেশে পাঠানো হয়?
- দক্ষিণ কোরিয়া (EPS)
- জাপান (Technical Intern)
- মালয়েশিয়া
- সৌদি আরব
- কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত
যোগ্যতা:
- বয়সসীমা: সাধারণত ১৮-৩৯ বছর
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: অন্তত এসএসসি/এইচএসসি
- স্কিল ট্রেনিং: টিটিও থেকে ট্রেনিং নেওয়া থাকলে অগ্রাধিকার
📄 দরকারি ডকুমেন্টস ও প্রস্তুতি
বিদেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেতে হলে আপনাকে নিচের ডকুমেন্টগুলো প্রস্তুত রাখতে হবে:
- বৈধ পাসপোর্ট
- মেডিকেল ফিটনেস সনদ
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
- ট্রেনিং সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
- ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
⚠️ সরকারি বিদেশ যাওয়া প্রোগ্রামে প্রতারণা থেকে বাঁচার উপায়
বিদেশে যাওয়ার নাম করে অনেক ভুয়া এজেন্সি সাধারণ মানুষকে ঠকায়। সতর্ক থাকুন!
করণীয়:
- সরকারি ওয়েবসাইটে যাচাই করুন (boesl.gov.bd, probashi.gov.bd)
- সরকারি বিজ্ঞপ্তি ছাড়া কাউকে টাকা দেবেন না
- রেজিস্ট্রার্ড রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা দেখুন (BMET ওয়েবসাইটে)
❓ FAQ (প্রশ্নোত্তর)
Q: সরকারি স্কলারশিপ কোথায় পাওয়া যায়?
A: mofa.gov.bd ও educationboard.gov.bd তে নিয়মিত স্কলারশিপ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়।
Q: BOESL কিভাবে আবেদন করতে হয়?
A: তাদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ফরম পূরণ করে নির্ধারিত সময়ে আবেদন করতে হয়।
Q: সরকারি প্রোগ্রামে খরচ কেমন হয়?
A: অনেক ক্ষেত্রে আবেদন ফি বাদে অন্য কোনো খরচ থাকে না। তবে ভিসা ও টিকিটের খরচ অনেক সময় নিজের বহন করতে হয়।
🔚 উপসংহার: কোন পথে শুরু করবেন?
বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হোক নিরাপদ ও সঠিক পথে। আপনি যদি সরকারি মাধ্যমে বিদেশ যেতে চান, তবে:
- নিজেকে দক্ষ করুন
- নির্ভরযোগ্য সরকারি সোর্স থেকে তথ্য নিন
- কোনো রকম তাড়াহুড়ো না করে ধাপে ধাপে প্রস্তুতি নিন
👉 মনে রাখবেন, সঠিক প্রস্তুতি এবং সরকারি সহায়তা—এই দুই মিলেই আপনার বিদেশযাত্রা হতে পারে সার্থক ও নিরাপদ।
I have been creating content on business. I am used to read in daily newspaper and book. I also surf website to enrich my knowledge.